ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদের সংখ্যা ১৪২৩

গত জুলাই ও আগস্টে দেশে ঘটে যাওয়া ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় ১ হাজার ৪২৩ জন নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ তথ্য জানিয়ে একটি পোস্ট দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্বাস্থ্যবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য সচিব ও সমন্বয়ক তারেকুল ইসলাম। তিনি বলেন, সারা দেশে বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি উৎস থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী জুলাই মাসে শুরু হওয়া বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত ও আহতের প্রাথমিক তালিকা তৈরি করেছেন তারা।

তারেকুল ইসলাম বলেন, আমরা ১ হাজার ৪২৩ জন শহিদের একটি প্রাথমিক তালিকা তৈরি করতে পেরেছি। তবে এর মধ্যে সংযোজন-বিয়োজন হবে; এরমধ্যে পুলিশ বা ফ্যাসিবাদের দোসর ছাত্রলীগ বা আন্দোলনে নিহত না হওয়া কেউ থাকবেন না। ভেরিফিকেশেন এবং ভেলিডেশনের কাজটি চলমান রেখেছি।

তিনি বলেন, আন্দোলনের সময় ২২ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৫৮৭ জনের অঙ্গহানি হয়েছে। গুলি লেগে আংশিক বা সম্পূর্ণ দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন ৬৮৫ জন। ৯২ জনের দুই চোখেই গুলি লেগেছে, দুই চোখই নষ্ট হয়ে গেছে।

আহতদের তালিকা তৈরির কাজটি বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, আহতদের নিয়ে কাজ কাজ করাটা খুব দুরূহ। কারণ সংখ্যাটা বিপুল। আহতদের সংখ্যাও হালনাগাদ হবে। এরমধ্যে আমরা যখন হাসপাতাল থেকে তথ্য সংগ্রহ করি তখন প্রচুর গার্বেজ ডেটা চলে আসে। যারা আন্দোলনে আহত না তাদের নাম চলে আসে। আহতদের শুধু নাম পাওয়া যায়, মোবাইল নম্বর, ঠিকানা পর্যন্ত পাওয়া যায় না। আমরা কিছু ক্ষেত্রে গোয়েন্দা তথ্য নিয়ে তাদের নাম ঠিকানা উদ্ধার করতে পেরেছি। তারপর যাচাই করতে গিয়ে দেখেছি এদের মধ্যে কিছু আছে আন্দোলনে আহত হননি।

তারেকুল ইসলাম জানান, এ পর্যন্ত ৬০০ জনের বেশি আহতকে তাদের পক্ষ থেকে জরুররি সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশন ২ হাজার, সাজেদা ফাউন্ডেশন ৪৫০ জন রোগীর সার্বিক দায়িত্ব নিয়েছে, ১৮০০ জনকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে।

তিনি বলেন, সঠিক তথ্য না থাকায় যোগাযোগের অভাবে আহত অনেকের কাছে পৌঁছুতে দেরি হয়েছে। তবে যেখানেই খবর পাওয়া যাচ্ছে যে কারও আর্থিক সহায়তা দরকার, সেখানেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

সমন্বয়ক বলেন, চিকিৎসার ব্যবস্থা আগেই ফ্রি করা হয়েছে। কিন্তু এটাই যথেষ্ট না, অনেকের পরিবার টিকতে পারছে না। খাওয়ার টাকা নাই। আমরা যখনই এমন খবর পাচ্ছি সেখানেই বিভিন্ন ডোনার এজেন্সির মাধ্যমে আমরা সাহায্য পাঠানোর চেষ্টা করছি। হাসপাতালে ভর্তি, যাদের অঙ্গহানি হয়েছে, চোখের দৃষ্টি হারিয়েছে, গুলি লেগেছে-এমন রোগীদের কাছে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জুলাই শহীদ ফাউন্ডেশন আর্থিক সহায়তা পৌঁছে দেবে।

প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরবর্তীতে গত ১৫ আগস্ট আন্দোলনে হতাহতদের তালিকা তৈরি করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একটি কমিটি গঠন করে। কমিটির প্রধান করা হয় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব মুহাম্মদ হুমায়ুন কবিরকে। কমিটি তাদের প্রতিবেদন দেওয়ার পর গত ৯ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল বৈষম্যবিরোধী সারাদেশে অন্তত ৬৩১ জন নিহত, ১৯ হাজার ২০০ জনের বেশি আহত হয়েছে। সেটাও ছিল প্রাথমিক বা খসড়া তালিকা।

পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করে অন্যদের পড়ার সুযোগ করে দিন।

খুলনার সময়

একটি সৃজনশীল সংবাদপত্র

আমাদের ফেসবুক পেজ

আজকের দিন-তারিখ

  • সোমবার ,সন্ধ্যা ৬:১৩
  • ৭ অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ২২ আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  • ৪ রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিন