গাজায় একের পর এক বিপর্যয়ের মুখে পড়ছে ইসরায়েলি সেনারা। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাসের সামরিক শাখা আল কাসেম ব্রিগেডের কাছে ভয়াবহ তাদের ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটেছে। বুধবার (১৫ মে) এক জটিল অপারেশনে ইসরায়েলের ১২ সেনা নিহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ মে) আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আল কাসেম ব্রিগেড জানিয়েছে, বুধবার তারা ইসরায়েলের ১২ সেনাকে হত্যা করেছে। গোষ্ঠীটির এক বিবৃতিতে বলা হয়, উত্তর গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে একটি জটিল অপারেশনে আল কাসেম যোদ্ধারা ইয়াসিন ১৫০ শেল দিয়ে ইসরায়েলের একটি বুলডোজারকে নিশানা করেছে। এ সময় একটি বাড়িতে লুকিয়ে থাকা ইসরায়েলি বাহিনীকে লক্ষ্য করে আরও দুটি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এ ঘটনার পর উদ্ধারকারী বাহিনী ঘটনাস্থলের দিকে অগ্রসর হয়। এ ছাড়া তখন ইসরায়েলের মারকাভা ট্যাংকে বিস্ফোরণ ঘটে। এলাকাটিতে এ অভিযানে ইসরায়েলের ১২ সেনা নিহত হন।
এর আগে জাবালিয়ায় বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। এরপরই তাদের লক্ষ্য করে বুধবার হামলা চালায় আল কাসেম ব্রিগেড। জাবালিয়ায় এ অভিযানে দুই বাহিনীর মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়। এরও আগে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষাবাহিনী (আইডিএফ) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্টে জানায়, উত্তর গাজায় ‘সন্ত্রাসীদের’ সঙ্গে তুমুল লড়াই হচ্ছে। এর মধ্যে একটি ঘটনাতেই ইসরায়েলের ৫ সেনা হারিয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও তিন সেনা। তাদের অবস্থা গুরুতর। বুধবার এ ঘটনা ঘটে। আইডিএফ এ ঘটনার জন্য নির্দিষ্ট করে কাউকে দায়ী করেনি। তবে ইসরায়েলের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, আইডিএফের ট্যাংক থেকে ভুল লক্ষ্যে ছোড়া গোলায় তারা নিহত হন।
গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২০০ ইসরায়েলিকে হত্যার পাশাপাশি প্রায় ২৫০ ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে গাজায় বন্দি করে নিয়ে আসে হামাস। একই দিন হামাসকে নির্মূল এবং বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী এই সংগঠনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইসরায়েল। গত নভেম্বরে সাতদিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিনিময়ে ১১০ ইসরায়েলি বন্দিকে হামাস মুক্তি দিলেও এখনো তাদের হাতে শতাধিক বন্দি আছেন। অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। এ ছাড়া এ পর্যন্ত ৭৯ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে।