বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা ও কক্সবাজারে স্থানীয় জনগোষ্ঠির জন্য ১৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার মানবিক সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন চলাকালে উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে এ ঘোষণা দেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া। বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানা গেছে।
নতুন এ সহায়তা প্যাকেজের মধ্যে রয়েছে ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইডি) থেকে ১২ কোটি ৯০ লাখ ডলার এবং পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে প্রায় ৭০ মিলিয়ন ডলার। মারাত্মক খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মুখে পড়া ৬ লক্ষ ১০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গার জরুরি প্রয়োজন মেটানোই এ সহায়তার লক্ষ্য। ইউএসএআইডির সহায়তায় মার্কিন কৃষি বিভাগের কমোডিটি ক্রেডিট করপোরেশন রেশন থেকে ৭৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলারসহ এ সাহায্য দেওয়া হচ্ছে।
এ অর্থ বাংলাদেশের ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠির জন্য আমেরিকার কৃষকদের কাছ থেকে প্রায় ৫২ হাজার ২শ মেট্রিক টন খাদ্যপণ্য কিনে জাহাজীকরণ এবং বিতরণে সহায়তা করবে। এই অর্থায়ণ রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং কক্সবাজারের স্থানীয় জনগোষ্ঠি উভয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য, পুষ্টি এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো যেমন: আন্তর্জাতিক উদ্ধার কমিটি, ইউনিসেফ এবং জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচী সহায়তা করবে।
২০১৭ সালে রোহিঙ্গা সংকট শুরু হওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ২শ ৫০ কোটি ডলারেরও বেশি সহায়তা দিয়েছে বাংলাদেশকে। এরমধ্যে ২শ ১০ কোটি ডলার বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের জন্য ব্যয় করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র সংকটকবলিত রোহিঙ্গা জনগোষ্টির পাশে দাঁড়াতে এ ধরনের সহায়তা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র অন্যান্য আন্তর্জাতিক দাতা দেশগুলোকেও একই ধরনের সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যূত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। যাদের বেশিরভাগ মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর অভিযানে ফলে কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়।
জাতিসংঘ রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যূত করাকে ‘জাতিগত নিধন হিসেবে’ অভিহিত করেছে। অন্যান্য মানবাধিকার গোষ্ঠি এটিকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।