বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ডাকা ৩ দিনের সড়ক-রেল-নৌপথ অবরোধ কর্মসূচির মধ্যেও সরকারি পরিবহন ট্রেন নিরবচ্ছিনভাবে চলাচল করবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। সোমবার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক মাসুদ সারোয়ার বিষয়টি জানান। তিনি বলেন, অবরোধে ট্রেনের কোনো সময়সূচি পরিবর্তন হবে না। ট্রেন সময়মতো চলবে।
এর আগে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ জানান, মঙ্গলবার থেকে টানা ৩ দিন সারাদেশে সড়ক-রেল-নৌপথ অবরোধ কর্মসূচি উপেক্ষা করে ঢাকাসহ সারাদেশে পণ্য ও যাত্রী পরিবহন চলাচল অব্যাহত থাকবে। এ বিষয়ে মালিক-চালকদের অনুরোধ জানানো হয়েছে। মহাসমাবেশে পুলিশি বাধা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ এবং সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আগামী ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত টানা তিন দিনের সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। রোববার সন্ধ্যায় (২৯ অক্টোবর) দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এ কর্মসূচির মধ্যে সড়ক, রেল ও নৌপথ অন্তর্ভুক্ত থাকবে বলে ঘোষণা করা হয়।
উল্লেখ্য, শনিবার (২৮ অক্টোবর) বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও জামায়াতে ইসলামী ঢাকায় সমাবেশ করে। দুপুরের পর কাকরাইল এলাকায় বিএনপির সমাবেশে আসা লোকজনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সমাবেশগামী লোকজনের সংঘর্ষ হয়। এসময় প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনা ঘটে। ছবি তুলতে যাওয়া অনেক সাংবাদিককে তখন মারধর করা হয়। একদল যুবক কাকরাইলের আইডিইবি ভবনে ঢুকে কয়েকটি মাইক্রোবাসে আগুন লাগিয়ে দেয়।
এরপর পুলিশ বড় ধরনের অ্যাকশনে যায়। সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল ছুড়ে তারা বিএনপি নেতাকর্মীদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া শুরু করে। এক পর্যায়ে ধাওয়া দিয়ে তারা নয়াপল্টনের মহাসমাবেশও পণ্ড করে দেয়। ধাওয়া খেয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা চারদিকে ছড়িয়ে পড়েন। পরে নয়াপল্টন, পুরানা পল্টন মোড় ও আশপাশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপি-পুলিশ-আওয়ামী লীগের সংঘর্ষ হয়। এসব ঘটনায় বিএনপির বহু নেতাকর্মীর পাশাপাশি অনেক পুলিশ সদস্য ও সাংবাদিকরা আহত হন। নয়াপল্টন এলাকায় এক পুলিশ সদস্যকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। একইসময় আরও এক পুলিশ সদস্যকে লাঠি দিয়ে গণপিটিুনি দেওয়া হয়। মাথায় হেলমেট থাকায় তিনি প্রাণে বেঁচে যান।
এসব ঘটনা চলাকালে এবং পরে সন্ধ্যা ও রাত পর্যন্ত ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ৫টি বাসে আগুন দেওয়া হয়। রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে হামলা চালিয়ে কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এসময় পুলিশ হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তি নিহত হন। বিএনপি দাবি করেছে তিনি তাদের কর্মী। ঢাকার এসব ঘটনার আঁচ লাগে জেলা পর্যায়েও। রাতে সাভার, গাজীপুর, মুন্সীগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলায় বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে।