‘কাকে ভোট দেবেন সেটি নয়, ভোট প্রয়োগ আপনার নৈতিক দায়িত্ব’

  • অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী
    চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল

নির্বাচনী প্রচারণা শেষ হয়ে গেছে। অপেক্ষা এখন ভোট দেয়ার। এ সময় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আমাদের সবাইকে মনে রাখতে হবে যে, নাগরিক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব কী? একটি গণতান্ত্রিক দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের প্রত্যেকের অবশ্যই উচিত ভোট দেয়া। অনেকে হয়তো স্থির করেই ফেলেছেন আপনি কাকে ভোট দেবেন। আপনি যাকেই ভোট দেন সেটা কোনো মূখ্য বিষয় নয়, আপনার ভোটই মূখ্য বিষয়। আপনার ওপর অর্পিত দায়িত্ব আপনি পালন করবেন। তবে আমাদের ব্যক্তি স্বার্থে, সর্বোপরি দেশের স্বার্থে এবং দেশে গণতন্ত্র থাকবে কিনা সেই স্বার্থে, বাংলাদেশ স্থায়ী রূপে একটি উন্নত দেশ হবে কিনা সেই স্বার্থে আমরা ভোট কোথায় দিব সেটি খুব গভীর ভাবে ভাবতে হবে।

আমি ব্যক্তিগতভাবে আপনাদের বলব আপনারা ভোটের দিন সকাল সকাল ভোট দিতে যাবেন। বাংলাদেশে সব সময় দেখা গেছে, মোটামুটি সকাল ৮টা থেকে ৯টা এই সময়ের দিকে বেশির ভাগ লোক ভোট দিতে যায়। ১২টার মধ্যে অধিকাংশ ভোট দেয়া হয়ে যায়। এরপর যা ভোট পড়ে সেটা ভোটের পারসেন্টকে খুব বেশি প্রভাবিত করে না। এবারের ভোট আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ দেশে এবং আন্তর্জাতিকভাবে এই নিয়ে নানা রকম ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সুতরাং আমাদের বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ থেকে অবশ্যই অবশ্যই ভোট দিতে হবে।

ভোটের দিন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিশ্চিয় ভালো থাকবে। এটা নিয়ে কারো উদ্বেগ হবার কিছু নেই। নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তারা কি কাজ করবেন সেটা নিয়েও আমাদের কোনো চিন্তা নাই। কিন্তু ভোট দেয়ার বিষয়টি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যদি দেশের এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করতে চাই তাহলে আমাদের হাতে সবচেয়ে বড় অস্ত্র আছে। আর সেই অস্ত্র হচ্ছে রোববার ভোট দেয়া। এই দিন বাংলাদেশের ভবিষ্যত নির্ধারণ হবে। তারপর আলোচনা হবে যে, ভোট ঠিক মতো হয়েছে কিনা। কিন্তু আমাদের যে ভোট দেয়ার দায়িত্ব এই দায়িত্ব আমাদের পালন করতেই হবে।

মনে রাখতে হবে যে অনেকে লিফলেট দিচ্ছে, অনেকে বাইরে থেকে বাণী দিচ্ছে, অনেকে অত্যন্ত আপত্তিজনক ভাবে ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ার বার্তা দিচ্ছেন। কিন্তু এটিকে বরং আমাদেরকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে হবে। আমরা ভোট কেন্দ্রে যাবই। আপনারা লক্ষ্য করলে দেখবেন যে, সর্ব যুগের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যিনি দেশকে স্বাধীন করেছেন তার কন্যা বাংলাদেশকে সোনার বাংলা করার ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি আমাদের একটি রোডম্যাপ দিয়েছেন যে, কোন সময় তিনি বাংলাদেশের জন্য কী কী করবেন। তিনি যখন এভাবে রোডম্যাপ ধরে এগুচ্ছেন, আমরা যদি তাকে সত্যিকার অর্থে সহযোগিতা করতে চাই তাহলে আমাদের এখন একটি সামান্য দায়িত্ব। এই সামান্য দায়িত্বকে অসামান্য দায়িত্ব ভাবতে হবে। ভাবতে হবে যে, এই দায়িত্ব পালনে যদি সামান্য ব্যত্যয় ঘটে তাহলে আমাদের দেশে যে ক্ষতি হবে, গণতন্ত্রের যে ক্ষতি হবে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কথা যে আমরা বলি তার যে ক্ষতি হবে সেই ক্ষতি আর পোষানো যাবে না।

এখন বিষয় হচ্ছে ভোট দেয়া। শুধু নিজে ভোট দিলে হবে না, পরিবারকে, বন্ধু বান্ধব সবাইকে নিয়ে যেতে হবে। এবার নির্বাচন কমিশন একটি ভালো কাজ করেছে। আর তা হল এবার গণপরিবহন বন্ধ থাকবে না। এটার জন্য কমিশন বাহবা পেতেই পারে। গণপরিবহন চালু থাকলে ভোটারদের সুবিধা হবে। অনেকে হয়তো ধানমন্ডির ভোটার, তিনি থাকেন গুলশানে। অথবা গুলশানের ভোটার, থাকেন ধানমন্ডিতে। তাদের জন্য ভোট দেয়া এবার সুবিধা হবে।

জীবনের শেষ প্রান্তে এসে আমি একটা বিষয় বেশ ভালো ভাবেই উপলদ্ধি করছি যে, এবারের মত এতো শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট দেওয়ার সুযোগ এর আগে নির্বাচন কমিশনও করেনি, সরকারও করেনি। সুতরাং আমাদের এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে হবে।

আমি লক্ষ্য করেছি এবং কিছু কিছু মসজিদে দেখেছি যে, প্রার্থী গিয়ে বলেছেন আপনারা ভোট দিতে যাবেন। আমাকে দিতে হবে এমন কোনো কথা নাই। আপনি আপনার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিবেন। যাকে খুশি তাকে দিবেন। এটা তাদের একটা ভালো আহ্বান বলে আমি মনে করি এবং অনেকে ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে। সুতরাং আপনা কিন্তু এখন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নিশ্চিয় আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করব। আমরা প্রত্যেকে আমাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করব। পরিশেষে সেই মার্কাতে ভোট দিব যাদের দ্বারা আজকের সোনার বাংলা গঠন হয়েছে এবং দেশ উন্নতির মহাসড়কে রয়েছে।

পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করে অন্যদের পড়ার সুযোগ করে দিন।

খুলনার সময়

একটি সৃজনশীল সংবাদপত্র

আমাদের ফেসবুক পেজ

আজকের দিন-তারিখ

  • শনিবার ,বিকাল ৪:৪১
  • ২৭ জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ১২ শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  • ২১ মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিন