ক্ষোভ এবং হতাশায় খুলনার ছয়টি আসনে এখনও নির্বাচনী প্রচারে নামেননি জাতীয় পার্টির (জাপা) ছয় প্রার্থী। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে এখনই সরে যাওয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন তাদের তিনজন। বাকি তিনজন আরও দু-তিন দিন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের পক্ষে মত দিয়েছেন। তবে দলের জেলা, মহানগর, থানা, উপজেলা ও ওয়ার্ড কমিটিগুলোর অধিকাংশ নেতাই মতবিনিময় সভায় নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার পক্ষে মত ব্যক্ত করেছেন। নগরীর ডাকবাংলো মোড়ে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে বুধবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সভা করেন দলের নেতাকর্মীরা। এতে দলের ছয় প্রার্থী, মহানগর, জেলা, থানা, উপজেলা ও ওয়ার্ড কমিটি এবং অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলোর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় অধিকাংশ নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে তারা সন্তুষ্ট নন।
নেতাকর্মীরা জানান, মূলত খুলনার একটি আসনেও আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে ছাড় না দেওয়ায় নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ ও হতাশ। তাদের ধারণা ছিল, খুলনা-৬ আসনটি আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেবে, কিন্তু তা হয়নি। বৈঠকে উপস্থিত থাকা একাধিক নেতা জানান, খুলনা-৩ আসনের প্রার্থী মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন, খুলনা-৫ আসনের প্রার্থী মো. শাহীদ আলম ও খুলনা-৬ আসনের প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধু নির্বাচন থেকে এখনই সরে যাওয়ার পক্ষে মত দেন। তবে অন্য তিন প্রার্থী দলের নেতাদের মনোভাবের বিষয়টি কেন্দ্রীয় কমিটিকে জানিয়ে তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার পক্ষে মত দেন।
খুলনা-৪ আসনের প্রার্থী মো. ফরহাদ আহমেদ বলেন, বেশির ভাগ নেতা তাদের বক্তৃতায় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে যাওয়ার পক্ষে মত দেন। সভায় দু-এক দিনের মধ্যে ঢাকায় গিয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে বিষয়টি জানানো হবে। সেখান থেকে সন্তোষজনক সমাধান না পেলে তারা ছয় প্রার্থী খুলনায় ফিরে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নির্বাচন বর্জন করতে পারেন। খুলনা-৩ আসনের প্রার্থী ও মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আসন ভাগাভাগি নিয়েই মূলত নেতাকর্মীর মাঝে ক্ষোভ। আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে ২৬টি আসন দেওয়ার বিষয়টি প্রকাশ করায় জটিলতা তৈরি হয়েছে। ওই আসনগুলোর বাইরে আমরা যাতে ভোট না পাই সেই ধরনের একটা কাজ হয়ে গেছে। এখন তো মানুষ আমাদের দালাল বলছে। আমরা ভোটারদের কাছে গিয়ে কী বলব?
খুলনা-২ আসনের প্রার্থী মো. গাউসুল আজম বলেন, দলের নেতাকর্মীর মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করায় আমরা এখনও প্রচার শুরু করিনি।খুলনা-১ আসনের প্রার্থী কাজী হাসানুর রশীদ বলেন, কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্তহীনতার কারণে এখনও নির্বাচনী প্রচারে নামিনি। আমরা ঢাকায় গিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব। খুলনা-৫ আসনের প্রার্থী মো. শাহীদ আলম বলেন, খুলনায় জাতীয় পার্টিকে একটি আসনেও ছাড় দেয়নি আওয়ামী লীগ। সে কারণে দলের নেতাকর্মীর মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। সভায় দলের নেতারা আমাদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার জন্য বলেছেন।খুলনা-৬ আসনের প্রার্থী ও জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি শফিকুল ইসলাম মধু বলেন, কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেব, প্রচারে নামব নাকি নির্বাচন থেকে সরে যাব।