গাজা হতে ইসরাইল সৈন্য প্রত্যাহার শুরু হয়েছে

ফিলিস্তিন

খুলনার সময়: ইসরাইল এর হামলা থেমে নেই তবে গাজায় হামাস যোদ্ধাদের তুমুল প্রতিরোধে ইসরাইলি বাহিনী স্থল অভিযান অনেকটা সংকুচিত করেছে। হামাসের শীর্ষ নেতা আরৌরী সহ সাত নেতার গুপ্ত হত্যার পর থেকে গোটা ফিলিস্তীনিদের মাঝে চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। গাজার হামাস যোদ্ধারা ইতিমধ্যে ঘোষনা দিয়ে বলেছে যে গাজার প্রতিজন ফিলিস্তীনি এক এক জন হামাস। আর তাই গোটা ফিলিস্তীনি জনপদে ইসরাইলের বর্বর হামলায় ফিলিস্তীনিদের নির্বিচারে হত্যাকান্ড অপেক্ষা অধিকতর হারানোর বেদনায় যুদ্ধ, ব্যথিত, উত্তেজিত এবং মর্মাহত ফিলিস্তীনিরা। লেবাননে ইসরাইলি বাহিনীর গুপ্ত হামলায় হামাস নেতাদের হত্যার পর পরই হামাস মুহুর্তের মধ্যে ঘোষনা দেয় যে কোন ভাবেই ইসরাইল ছাড় পাবে না একই সাথে তারা আরও বলেন যে ইসরাইলের সাথে কোন ভাবেই যুদ্ধ বিরতি বা অন্য কোন বিষয়ে আলোচনায় বসবেন না। যে কারনে গত চার/পাঁচ দিন যাবৎ ইসরাইলের বাহিনীকে প্রতিহত করনের ক্ষেত্রে হামাস যোদ্ধারা ব্যাপক ভিত্তিক হামলা চালাচ্ছে। গাজা ভূখন্ডে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী সাম্প্রতিক সময়গুলো চরম ভাবে অস্বস্তিতে। প্রতিদিনই হামাসের হামলায় ও হামাসের সাথে যুদ্ধে ইসরাইলের সেনা সদস্যরা হতাহত হচ্ছে। গতকাল ও গাজার উত্তরে ইসরাইলি বাহিনীর সাথে তুমুল যুদ্ধ সংঘটিত হয়। পশ্চিমা মিডিয়ার খবরে বলা হয়েছে গাজায় প্রায় তিন মাসের ব্যবধানে ইসরাইলি বাহিনী যে ভাবে ধরা খাচ্ছে অর্থাৎ নিহত সহ ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হচ্ছে ইসরাইলের ঐতিহ্য এবং মর্যাদার প্রতিক ট্রাঙ্ক ও সামরিক যানগুলো হামাস যোদ্ধাদের হামলায় প্রতি মুহুর্তে তছনছ হচ্ছে। ধ্বংস হচ্ছে সামরিক যান। গাজায় ইসরাইলি বাহিনী বিপদজনক পরিস্থিতির মুখে পড়ায় এবং একের পর এক হামলার শিকার হওয়ায় গতকাল পশ্চিমা মিডিয়া জানিয়েছে গাজা হতে ইসরাইল সেনা সরিয়ে নিচ্ছে। পশ্চিমা মিডিয়া গুলো বলছে হঠাৎ করে ইসরাইল গাজা হতে সেনা সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে এভাবেই মন্তব্য করেছে যে, ব্যাপক ভিত্তিক শক্তি সঞ্চয়ের লক্ষে ইসরাইল সেনা সরিয়ে নিচ্ছে। হামাসের পক্ষ হতে অবশ্য বলা হয়েছে দখলদার ইসরাইল বাহিনী হামাস যোদ্ধাদের সাথে না পেরে পরাজয়ের মুখে তারা তাদের সেনা সরিয়ে নিচ্ছে। গতকাল ইসরাইল যখন সেনা প্রত্যাহারের কাজ করছিল তখনও হামাসের যোদ্ধারা তাদের সেনা উপস্থিতির উপর ব্যাপক ভিত্তিক হামলা পরিচালনা করতে থাকে হামাস যোদ্ধারা। গতকাল ও হামাস যোদ্ধাদের সাথে উত্তরাঞ্চলের পাশাপাশি গাজার পশ্চিমাঞ্চলেও সম্মুখ যুদ্ধ করেছে ইসরাইল বাহিনী। হামাস এর সশস্ত্র শাখা কাসেম ব্রিগেড তাদের নিজস্ব টেলিগ্রাম বার্তায় জানিয়েছে গাজা যুদ্ধের শুরু হতে এ পর্যন্ত তাদের হাতে ইসরাইলের এক হাজারের বেশী সেনা নিহত হয়েছে এবং বিকলাঙ্গ হয়েছে সাড়ে বার হাজার সেনা, আমাদের যে সকল যোদ্ধা শহীদ হয়েছে সে অপেক্ষা দ্বিগুন যোদ্ধা সৃষ্টি হয়েছে। ইসরাইলের পুনঃ বাসন কেন্দ্রগুলোতে গাজা যুদ্ধে হাত, পা, চোখ হারানো সেনাদেরকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এদিকে গতকাল ও গাজার একাধিক আশ্রয় শিবিরে দখলদার বাহিনী বোমা হামলা চালিয়েছে। গাজার হঠাৎ করে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের কারনে দুর্ভোগ বেড়েছে। গাজার বিস্তীর্ণ এলাকা বৃষ্টির পানিতে প্লাবিত হয়েছে। উত্তর গাজার বৃহত্তম আশ্রয় শিবির জাবালিয়া শিবির বৃষ্টির পানি কল্যানে দুর্ভোগের কারনে পরিনত হয়েছে। নর্দামার পানি জাবালিয়া আশ্রয় শিবিরে প্রবেশ করায় আশ্রয় প্রার্থীরা সেচ্ছায় অবস্থান করতে পারছে না। আশ্রয় শিবিরে আশ্রয় গ্রহণকারী নারী ও শিশুরা বিশেষ ভাবে অসুবিধার সম্মুখিন। কাতার ভিত্তিক টেলিভিশন আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে এক মহাদূর্ভোগ অতিক্রম করছে জাবালিয়া আশ্রয় শিবির। উক্ত স্থানে পাণি ভরে থাকায় দুর্ভোগের পাশাপাশি নানান ধরনের পানি বাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। ইসরাইলের দখলদারিত্ব থেমে নেই। এক দিকে অসহায়, নিরীহ ফিলিস্তীনিদের হত্যা অন্যদিকে গাজা ভূমিতে ইহুদীদের বসতি স্থাপন শুরু করেছে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী। ১৯৬৭ সালে ইসরাইল ফিলিস্তীনিদের নিজস্ব ভূমি পশ্চিমতীর দখল করলে যুদ্ধ হয়। বর্তমানে ইসরাইল পশ্চিম তীরে নতুন করে বসতি স্থাপন শুরু করেছে। এদিকে গতকাল ইসরাইলি বাহিনী গাজার পশ্চিম তীরে ঘরে ঘরে তল্লাশী অভিযান শুরু করে এ সময় নির্বিচারে গ্রেফতার করছে, ফিলিস্তীনিদের ঘরে ঘরে তল্লাশীর সময়ে নগদ অর্থ সহ মূল্যবান সামগ্রী লুট করছে। গাজার দোকান গুলোতে বিক্রির জন্য রাখা সিগারেট বিস্কুট লুট করছে ইসরাইলি সেনা সদস্যরা ফিলিস্তীনি হামাস যোদ্ধাদেরকে বিতাড়িত করতে না পেরে এবং তাদের হামলা প্রতিরোধ ও প্রতিহত করতে না পেরে এবার হামাস যোদ্ধাদেরকে ধর্ষক বানানোর প্রচেষ্টা করছে। কিন্তু ইসরাইলি সেনা বাহিনী কোন ভাবেই তার প্রমান করতে পারছে না। এদিকে লোহিত সাগরে জোটভূক্ত দশ দেশের সেনাদের উপর হামলা চালিয়েছে হুতি যোদ্ধারা। এই যোদ্ধারা দৃশ্যতঃ সাগরে ব্যাপক নিয়ন্ত্রন গ্রহন করে ইসরাইলগামী জাহাজ ও পশ্চিমা জাহাজ চলাচলে বাঁধা সৃষ্টি করছে এবং জাহাজ আটক ও হামলা চালাচ্ছে। লেবাননের হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা গতকালও ইসরাইলের ভূ-খন্ডে হামলা চালিয়েছে। সৌদি আরবের পক্ষ হতে আবারও ইসরাইলকে হামলা বন্ধের আহবান জানিয়ে বলে ইসরাইল যদি হামলা বন্দ না করে এবং নিরীহ ফিলিস্তীনিদের হত্যা মিশন না থামায় তাহলে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়লে তার দায় ইসরাইলকে নিতে হবে।

পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করে অন্যদের পড়ার সুযোগ করে দিন।

আমাদের ফেসবুক পেজ

আজকের দিন-তারিখ

  • শনিবার ,বিকাল ৪:৩৯
  • ২৭ জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ১২ শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  • ২১ মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিন