ডেঙ্গু নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানীর সতর্কতা

WHO

বিশ্ব ডেস্ক: বাংলাদেশে ডেঙ্গু জ্বর চোখ রাঙাচ্ছে। মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর মধ্যেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডাব্লিউএইচও) প্রধান বিজ্ঞানী ডেঙ্গু নিয়ে দিলেন নতুন এক বার্তা। তিনি বলেছেন, দক্ষিণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ ইউরোপ এবং আফ্রিকার নতুন অংশের জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠবে ডেঙ্গু। ডাব্লিউএইচওর প্রধান বিজ্ঞানী আরো বলেছেন, উষ্ণ তাপমাত্রায় মশা ডেঙ্গু সংক্রমণ আরো দ্রুত ঘটায়। এশিয়া এবং লাতিন আমেরিকার বেশির ভাগ অঞ্চলে ডেঙ্গু দীর্ঘকাল ধরেই একটি আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই রোগে প্রতিবছর আনুমানিক ২০ হাজার মানুষ মারা যায়। ২০০০ সাল থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ডেঙ্গু ইতিমধ্যেই আট গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। মূলত জলবায়ু পরিবর্তনের পাশাপাশি নগরায়ণের ফলে ক্রমবর্ধমান হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২২ সালে বিশ্বব্যাপী ৪.২ মিলিয়ন ডেঙ্গু জ¦রে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছিল। জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন, চলতি বছর ডেঙ্গু সংক্রমণের হার রেকর্ড পরিমাণ বাড়তে পারে। বাংলাদেশ বর্তমানে তার সর্বকালের সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি দেখতে পাচ্ছে। দেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যু ছাড়িয়েছে এক হাজারের বেশি। মে মাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় যোগদানকারী সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ জেরেমি ফারার সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘আমাদের ডেঙ্গু সম্পর্কে আরো সক্রিয়ভাবে কথা বা প্রচার চালাতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের সত্যিই দেশগুলোকে প্রস্তুত করতে হবে। অনেক বড় শহরে বা অতিরিক্ত ডেঙ্গু রোগীর চাপ কিভাবে মোকাবেলা করবে… ভবিষ্যতে তা শেখাতে হবে।’ ফারার এর আগে ডেঙ্গুসহ গরমকালের কিছু রোগ নিয়ে ভিয়েতনামে ১৮ বছর কাজ করেছেন। তিনি পরে ওয়েলকাম ট্রাস্ট গ্লোবাল হেলথ দাতব্য সংস্থার নেতৃত্ব দেন এবং এই বছরের মে মাসে ডাব্লিউএইচও-তে যোগদান করেন। এর আগে যুক্তরাজ্য সরকারকে কভিড-১৯ নিয়ে পরামর্শও দিয়েছেন। ফারার বলেছেন, ডেঙ্গু সংক্রমণ সম্ভবত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এবং আফ্রিকার কিছু অংশের জন্য স্থানীয় রোগ হিসেবে পরিচিতি পেতে পারে। ইতিমধ্যেই সীমিত আকারে এই অঞ্চলে ডেঙ্গুর সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। কারণ বৈশ্বিক উষ্ণতা মশার অনুকূলে থাকে এবং সহজেই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। ডেঙ্গু সংক্রমণ বাড়লে অনেক দেশের হাসপাতালগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করবে বলে তিনি সতর্ক করেছেন। তিনি বলেন, ‘আইসিউ-এর প্রয়োজন পড়বে, সঙ্গে রোগীদের জন্য নার্সের। তবে আফ্রিকার জন্য ডেঙ্গু বড় একটি সমস্যা হয়ে উঠবে। সত্যিই আমি তা নিয়ে উদ্বিগ্ন।’ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত বেশির ভাগ মানুষের কোনো উপসর্গ দেখা দেয় না। ফলে আক্রান্তরা বেশির ভাগ ডাক্তারের কাছে যান না। তাই সঠিক আক্রান্তের সংখ্যাটাও জানা যায় না। যারা যান তাদের তীব্র জ¦র, পেশির খিঁচুনি এবং জয়েন্টে ব্যথা থাকে। যা ‘ব্রেক-বোন ফিভার’ নামে পরিচিত। ফারার বলেন, ডেঙ্গু মোকাবেলা করার জন্য বিশ্বের নতুন অঞ্চলগুলোকে প্রস্তুত করার অর্থ হলো, মশা নিয়ন্ত্রণের সর্বোত্তম উপায়সহ জনস্বাস্থ্যের তহবিল সঠিক এলাকায় ব্যয় করা। ডেঙ্গু এডিস মশার মাধ্যমে ছড়ায়। যা ম্যালেরিয়ার জীবাণু বহনকারী মশার চেয়ে ভিন্ন। উদাহরণস্বরূপ, এই মশা ঘরের ভেতরে মানুষকে কামড়ায় এবং রাতের থেকে দিনের বেলা বেশি কামড়ায়। খুব অল্প পানিতে তারা বংশবৃদ্ধি করতে পারে। ফারার বলেছেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে হাসপাতালগুলোর জন্য সঠিক পরিকল্পনা তৈরি করা। পাশাপাশি বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবনের সঙ্গে সঠিক নগর পরিকল্পনা, বাড়ির কাছাকাছি অবস্থিত পানির জায়গাগুলো অন্তর্ভুক্ত করা। ফারার আরো বলেন, ‘আমাদের বিভিন্ন সেক্টরকে একত্র করতে হবে। যারা এর আগে একসঙ্গে কাজ করেনি বা অভ্যস্ত নয়।’

সূত্র : রয়টার্স

পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করে অন্যদের পড়ার সুযোগ করে দিন।

খুলনার সময়

একটি সৃজনশীল সংবাদপত্র

আমাদের ফেসবুক পেজ

আজকের দিন-তারিখ

  • রবিবার ,রাত ৪:১৩
  • ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ৩০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  • ১৩ জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিন