অনলাইন ডেস্ক: কুড়িগ্রামের তিস্তা নদীতে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে কমেছে উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানি। এরই মধ্যে ৩৫ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটারে নেমেছে পানি। তবে এবার নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে সম্পূর্ণ কাদাপানি। গত ৩০ বছরে এরকম কাদাপানি দেখেনি তিস্তা পাড়ের মানুষ। এতে নতুন করে আশায় বুক বাঁধছেন স্থানীয় লোকজন। এছাড়াও পানি কমতে থাকায় কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছেন নদীপাড়ের মানুষ।
স্থানীয় লোকজন বলছেন, এবার তিস্তায় কাদাযুক্ত পানি দেখা গেছে। ফলে নদীর ওপরের জমিতে পলিমাটি জমবে। বন্যার পানি শুকিয়ে যাবার পরও জমিতে থেকে যাবে পলিমাটি। এর কারণে চরে বিভিন্ন ফসলি জমির সংখ্য্যা বাড়বে। এতে করে এবার আবাদ ভালো হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন চরাঞ্চলের কৃষকেরা।
উলিপুর উপজেলার বজরা ইউনিয়নের তিস্তা পাড়ের বাসিন্দা শমসের আলী বলেন, এর আগে কখনও এরকম পানি তিস্তায় দেখিনি। এবার যে পানি নদীতে আসছে, সব কাদাপানি। আমরা ধারণা এই পানি গায়ে লাগলে পানি বাহিত রোগ হতে পারে।
রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. আজমত বলেন, মুহূর্তেই পানি এসে মুহূর্তেই নেমে গেছে। তবে এবার কাদাযুক্ত পানির কারণে বিভিন্ন জমিতে পলি পড়বে। এ কারণে বন্যা পানি শুকিয়ে গেলে জমিতে ভালো আবাদ হবার সম্ভাবনা আছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে কয়েকঘণ্টা ব্যবধানে কমে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সকালের দিকে একই পয়েন্টে ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল তিস্তার পানি।
পানি বৃদ্ধি কারণে জেলার রাজারহাট ও উলিপুর উপজেলার তিস্তার অববাহিকার চরাঞ্চলগুলোর ঘর-বাড়ি ও ফসলি জমিতে পানি উঠেছে। তবে এখন পানি কমতে থাকায় কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছেন নদীপাড়ের মানুষ।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় কুড়িগ্রামে ৬০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত বৃষ্টিপাত থেমে থেমে অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। শুক্রবার (৬ অক্টোবর) বৃষ্টিপাত কমে স্বাভাবিক হতে পারে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, তিস্তার পানি কমতে শুরু করছে। তবে ৫-৬ ঘণ্টার পর আবার তিস্তার পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে। পানি বৃদ্ধি পেলেও বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।