পায়ুপথের রোগ পলিপ

পায়ুপথের রোগ পলিপ

স্বাস্থ্য সময়: পলিপ হলো টিস্যু বৃদ্ধি। এগুলো ডালপালা সহ ছোট, সমতল বা মাশরুমের মতো বৃদ্ধির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ হয়ে থাকে। এইগুলো সাধারণত আধা ইঞ্চির কম চওড়া হয়। সবচেয়ে সাধারণ ধরনের পলিপ জরায়ু এবং কোলনে বিকশিত হয়। পলিপ পায়ুপথের ক্যান্সার রোগের লক্ষণ হতে পারে। তাই পায়ুপথের রোগ পলিপ হলে মোটেও অবহেলা করতে নেই। অ্যাডেনোমাটাস পলিপ (পলিপ হলো মাংসের পিন্ড) পায়ুপথের সঙ্গে অনেক সময় লেগে থাকে। পরীক্ষা করলে ক্যান্সারপূর্ববর্তী অবস্থায়ও অস্বাভাবিক কোষ থাকতে পারে, যা ক্যান্সারের আভাস দেয়। এক বা একাধিক পলিপ হতে পারে বৃহদান্ত্রে। ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে এটি খুব বেশি দেখা যায়। শিশুর কিছু একটা পায়ুপথ দিয়ে বেরিয়ে আসে, সঙ্গে থাকে রক্তপাত। শিশুদের ক্ষেত্রে এটি কিন্তু ক্যান্সারের পূর্ব লক্ষণ নয়। কিন্তু তরুণ বা ৪০-৫০ ঊর্ধ্ব কারও একই সমস্যা থাকলে সতর্ক হতে হবে। এ ক্ষেত্রে সাধারণত পারিবারিক ইতিহাস থাকে, যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কম বয়সে কারও কারও শতাধিক ছোট পলিপ থাকতে পারে। এটা জিনগত ত্র“টির কারণে হয়। একে ফ্যামিলিয়াল অ্যাডেনোমাটাস পলিপোসিস সংক্ষেপে এফএপি বলে। বয়স্কদের একটি বা দুটি পলিপ থাকে। এগুলো ক্যান্সার সিনড্রোমের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে পরিবারে অনেক ধরনের ক্যান্সারের আধিক্য থাকতে পারে। এটিও জিনগত ত্র“টির কারণে হয়। এই পলিপ বা অ্যাডেনোমা একটা কোষগত পরিবর্তনের মধ্যদিয়ে যায়, যার ফলে এ থেকে ক্যান্সার হতে পারে। একে বলে অ্যাডেনোমা কার্সিনোমা সিকোয়েন্স। অ্যাডেনোমাটাস পলিপের ধরন টিবুলার অ্যাডেনোমা আঙ্গুলের মতো দেখতে। পায়ুপথের সঙ্গে সরু নালির সাহায্যে ঝুলে থাকে। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক হলেও বড়দের ক্ষেত্রে এটি অপসারণ করে পরীক্ষা করা উচিত। ভিলাস অ্যাডেনোমা দেখতে ফুলকপির মতো। পায়ুপথের সঙ্গে বড় জায়গাজুড়ে লেগে থাকে। এটির ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা খুবি বেশি এবং এটি তার শিকড় সহ কিছুটা স্বাভাবিক পায়ুপথের স্থান নিয়ে অপসারণ করা হয়। টিবুলোভিলাস অ্যাডেনোমা পূর্ববর্তী দুটির মিশ্রিত রূপ। এটিকেও ক্যান্সারের পূর্ববর্তী পর্ব ধরা হয়। লক্ষণসমূহ অনেক সময় পলিপের লক্ষণ নাও থাকতে পারে। তবে পাতলা পায়খানা, আমযুক্ত রক্তমিশ্রিত পায়খানা, রক্তপাত, পেটে মোচড় দেয়া, পেটে অস্বস্তি ইত্যাদি লক্ষণ থাকতে পারে। অনেক সময় রুটিন কোলোনোস্কপি করে দেখা যায়, এক বা একের বেশি পলিপ আছে। অনেক সময় পায়ুপথে আঙ্গুলের সাহায্যে পরীক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। পলিপ ছাড়া আঙ্গুলের মাথায় রক্তের ভাব, আম ইত্যাদি দেখেও বোঝা যায় সমস্যা আছে কিনা। কোলোনোস্কপি করা উচিত, বিশেষ করে যাদের পারিবারিক ইতিহাস আছে অথবা হঠাৎ করে উল্লিখিত কোনো সমস্যা অনুভব করা যাচ্ছে। এর ফলে এই পলিপ ক্যান্সারে রূপ নেয়ার আগেই অপসারণ করা সম্ভব। চিকিৎসা কোন অবস্থায় রোগী, তার ওপর চিকিৎসা নির্ভর করে। যদি বেশ জটিল না হয় বা অন্য কোনো রোগ না থাকে, তবে শুধু কোলোনোস্কপি করেই এটি অপসারণ করা যায়। এগুলো পারিবারিক ইতিহাস ও কিছু সিনড্রোমের সঙ্গে জড়িত, তাই পুরো শরীরের চেকআপ করা প্রয়োজন। অনেক সময় বড় অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে। একমাত্র সচেতনতাই পারে এ জাতীয় পরিস্থিতি এড়াতে।

পোস্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করে অন্যদের পড়ার সুযোগ করে দিন।

খুলনার সময়

একটি সৃজনশীল সংবাদপত্র

আমাদের ফেসবুক পেজ

আজকের দিন-তারিখ

  • শনিবার ,বিকাল ৩:২৯
  • ২৭ জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ১২ শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
  • ২১ মহর্‌রম, ১৪৪৬ হিজরি

আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিন