বিশ্ব ডেস্ক: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সতর্ক করে বলেছে, ইসরায়েলের অবরোধ এবং অনবরত বিমান হামলায় গাজার হাসপাতাল ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ছে। গতকাল শুক্রবার এই পরিস্থিতিতে গাজা উপত্যকায় অবিলম্বে মানবিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এ খবর জানিয়েছে। নিবিড় পরিচর্যা, এক্সরে ও ডায়ালাইসিস সেবার জন্য গাজার হাসপাতালগুলোতে দিনে মাত্র কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে। এ এমতাবস্থায় স্বাস্থ্যকর্মীদের আসা-যাওয়া এবং অসুস্থ ও আহতদের সরানোর জন্য একটি মানবিক করিডোর খোলার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের এই স্বাস্থ্য সংস্থা। তারা বলেছে, চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহে ঘাটতি রয়েছে। বৃহস্পতিবার সংস্থাটি এক বিবৃতিতে বলেছে, গাজায় স্বাস্থ্যসেবা, চিকিৎসা সরবরাহ, খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি, জ¦ালানি ছাড়া জরুরি প্রয়োজনে সাড়া দিতে পারছে না ত্রাণ ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। এগুলোর ঘাটতি মানুষের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব দ্য রেড ক্রস (আইসিআরসি) গাজার অবনতির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এই পরিস্থিতিকে ‘ঘৃণ্য’ বলে বর্ণনা করেছে সংস্থাটি। রেড ক্রসের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, গাজা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে হাসপাতালেও বিদ্যুৎ নেই। এতে ইনকিউবেটরে জন্ম নেওয়া নবজাতক ও অক্সিজেনে থাকা বয়স্ক রোগীরা ঝুঁকিতে পড়ছেন। তাছাড়া কিডনি ডায়ালাইসিস ও এক্সরে নেওয়া যায় না। বিদ্যুৎ না থাকলে হাসপাতালগুলো মর্গে পরিণত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় প্রায় ৩০টি হাসপাতাল রয়েছে। যার মধ্যে ১৩টি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দ্বারা পরিচালিত। বাকিগুলো বেসরকারিভাবে পরিচালিত হয়। ইসরায়েল বলেছে, আমরা গাজায় ছয় হাজার বোমা নিক্ষেপ করেছি। কারণ গত সপ্তাহে হামাস আমাদের ওপর আক্রমণ করেছিল। ওই হামলায় এক হাজার ৩০০ জন ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন। এদিকে ইসরায়েলের বিমান হামলায় এক হাজার ৫০০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। পাঁচ হাজোরের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। ডব্লিউএইচও বলেছে, শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত গাজার বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে ৩৪ বার হামলা হয়েছে। এই ঘটনায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১১ জন স্বাস্থ্যকর্মী নিহত ১৬ জন আহত হয়েছেন। তাছাড়া পাঁচ আইসিআরসি কর্মী নিহত হয়েছেন। ২০টি অ্যাম্বুলেন্স ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই মিসরকে রাফাহ সীমান্ত ক্রসিং খুলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।